রাজশাহী-১ আসনে ১০ প্রার্থীকে পিছনে ফেলে এগিয়ে ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে
রাজশাহী প্রতিনিধি:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১(তানোর-গোদাগাড়ী) সংসদীয় আসনে একাধিক প্রার্থী ভোটের মাঠে থাকলেও আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী (নৌকা) প্রতিক নিয়ে বিজয়ী হবার দৌড়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছেন।
এবার এ আসনে বিএনপি থেকে কোন প্রার্থী নির্বাচনে না থাকায় এখানে ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মতো তেমন কোনো নেতৃত্ব নাই বলে মনে করছেন তানোর-গোদাগাড়ী উপজেলার ভোটারগণ।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ওমর ফারুক চৌধুরী (নৌকা), বিএনএমের শামসুজ্জোহা (নোঙর), বিএনএফের আল-সাআদ (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির জামাল খান দুদু (সোনালী আঁশ), এনপিপির নুরুন্নেসা (আম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ (ছড়ি), জাতীয় পার্টির শামসুদ্দীন (লাঙ্গোল), মাহিয়া মাহি (ট্রাক) ও গোলাম রাব্বানী (কাঁচি) প্রতীক,আয়েশা আক্তার ডালিয়া(বেলুন),আখতারুজ্জামান আক্তার (ঈগল) প্রতিক নিয়ে মোট ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী জমিদার ও শহীদ পরিবারের সন্তান। তার বাবা শহীদ আজিজুল হক চৌধুরী ও মামা জাতীয় চার নেতার অন্যতম বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনা।
ফারুক চৌধুরী ৮০ দশকের সিআইপি, একটানা তিনবারের সাংসদ, একবারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী, ছিলেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক। একাধিকবার হয়েছেন জেলার সর্বোচ্চ স্বচ্ছ আয়কর দাতা।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল এবার নির্বাচনে ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে অন্যদের তুলনা করতেই নারাজ। কারণ হিসেবে বলছে, এমপি ফারুক চৌধুরী তার দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের রাজনৈতিক জীবনে তানোর-গোদাগাড়ী থেকে তিনি প্রতিদিন যদি ৫ জন করে মানুষের উপকার করে থাকেন, তাহলে ৩৬৫ দিনে ১৮২৫ জন এবং ২০ বছরে ৩৬ হাজার ৫০০ জন মানুষের সরাসরি উপকার করেছেন।
তাহলে উপকারভোগী এই মানুষগুলো তো এখানো এমপির পক্ষে মাঠে আছে। এমপির জন্য জীবন বাজি রেখে তারা কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও এই আসনের দুটি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা এবং ১৬টি ইউনিয়নের (ইউপি) আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি ওয়ার্ডের সাংগঠনিক নেতাকর্মী ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে রয়েছেন।
অথচ তার বিপরীতে গোলাম রাব্বানী দুইবার দলীয় মনোনয়নে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির দুর্বল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন।এমনকি দলে সভাপতি পদ ধরে রাখতে ব্যর্থ ও মুন্ডুমালা পৌর নির্বাচনে পরাজিত হবার শঙ্কায় প্রার্থী হতে পারেননি। স্থানীয়রা জানান, এমপি ফারুক চৌধুরীর আর্শিবাদে তিনি দুবার মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র হয়েছেন।
তার দশ বছর সময়ে মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় দৃশ্যমান তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। পৌরভবন ছিলো আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এমনকি নিয়োগ বাণিজ্যের কাহিনি সবার জানা। একটি পদের বিপরীতে একাধিক ব্যক্তির কাছে টাকা নেয়া হয়। কিন্ত্ত একজনের চাকরি হয় বাকিদের চাকরি না হলেও তারা টাকা ফেরত পায়নি।
এছাড়াও তিনি দুবার বার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই সময় তার সালিশ বাণিজ্যে, ইলামদহী হাট উন্নয়নে নয়ছয়ের খবর মানুষের মুখে মুখে প্রচার আছে বলে আলোচনা রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো যে ব্যক্তি ক্ষমতাসীন দলের মেয়র থাকার পরেও মুন্ডুমালা পৌরসভার মতো ছোট জায়গায় উন্নয়নে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি কি ভাবে আয়তনের দিক দিয়ে দেশের অষ্টম বড় নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন করবেন। আবার কি বিবেচনায় সাধারণ মানুষ তাকে বা তার কথা বিশ্বাস করবেন।
অন্যদিকে মাহীয়া মাহীকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে, এমপি নির্বাচনে বিজয়ী তো পরের কথা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মতো সামর্থ্য তার নাই।
ওদিকে অন্যরা আলোচনাতেই নাই। সকল প্রার্থীর আমল নামা বিচার-বিশ্লেষণ করা হলে কে যোগ্য এবং কাকে ভোট দেয়া প্রয়োজন বুকে হাত রেখে নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করলেই উত্তর পাওয়া যাবে। অভিজ্ঞ মহলের ভাষ্য এসব বিবেচনায় পরিক্ষিত ও আদর্শিক নেতৃত্ব ফারুক চৌধুরীর বিজয় প্রায় নিশ্চিত। রাজশাহী-১ আসনে ৪টি পৌরসভা ও ১৬ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার ২১৮ জন। দুই উপজেলা মিলে ভোটকেন্দ্র ১৫৮টি।
ভোটকেন্দ্রের কক্ষের সংখ্যা ৯৯৪ টি। অস্থায়ী ভোট কক্ষের ৫১ টি। নতুন ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩ টি। এআসনে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৩ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৫৬৪ জন। একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। আগামী ৭জানুয়ারী ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
রথীন্দ্রনাথ সরকার
২৮ ডিসেম্বর /২০২৩ইং