কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন ছাড়াই বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জুনাব আলীকে (৭৩) দাফন করা হয়েছে। শনিবার (২১ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তিনি পৌর এলাকার উত্তর ফালগুনকরা গ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান। পরে রাত ৯টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়
জুনাব আলীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি কমান্ডার আলী আশরাফের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন মো. জুনাব আলী। ওই সময় তিনি মাটিরাঙ্গা তবলছড়ি বড়বিল এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ভোগ করছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জুনাব আলীর ছেলে শাহ আলম বাবু জানান, ‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুর পরপরই আমি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. ইয়াছিনকে অবগত করি। আধা ঘণ্টা পরে তিনি আমাকে জানান, ইউএনওকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেছেন, রাতের বেলায় রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের বিধান নেই। এ কথা শোনার পর আমরা খুবই ব্যথিত হয়েছি।’
একই গ্রামের আবুল হাসান আরিফ বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জুনাব আলীকে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়েছে। এ খবর জানার পর আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে ব্যথিত ও মর্মাহত হয়েছি। লাল-সবুজের পতাকার জন্য যারা স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাদের প্রতি এই অবহেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম বলেন, ‘সূর্য ডোবার পর রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের কোনো নিয়ম নেই। আমরা খবর পেয়েছি সূর্য ডোবার একটু আগে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন বলেন, ‘প্রত্যেক বীর মুক্তিযোদ্ধাই রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মো. জুনাব আলীর মৃত্যুর সংবাদটি কেউ আমাকে অবগত করেনি। আমরা প্রত্যেক মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উপজেলা প্রশাসন থেকে সম্মান প্রদর্শনের ব্যবস্থা নিই।’